From Vanumati's Pitara
রঞ্জিতা ভট্টাচার্য্য (1991) |
যাই হোক, "সেলাই পিরিয়ডকে" আমি সবসময় hate করতাম। তো, একদিন হয়েছে কি, আমাদের লাস্ট পিরিয়ডটা ছিলো ওয়ার্ক-এডুকেশনের। আমি তখন ক্লাস টেন-এ পড়ি। আমার কাজ ছিলো আগের পিরিয়ডের শেষে একটা চক্কর মেরে ওয়ার্ক-এডুকেশনের টীচার এসেছেন কি না, তা দেখে আসা। আমি সারা স্কুল খুঁজে (এমন কি আনন্দের আতিশয্যে টিচার্স রেস্টরুম পর্যন্ত গিয়ে !!) ওনাকে না-দেখতে পেয়ে আনন্দে নাচতে নাচতে এসে বন্ধুদের সুখবরটি দিলাম। সেই সময়ে আমাদের ক্লাস হতো স্কুলের দো'তলায়। পাশ্চাত্য পাড়ার পার্কটার পাশে যে গন্ডগোলের পুকুর, সেটা ছিলো ঠিক আমাদের জানালার তলায়। তো, জানালার ধারে বসে আমরা সবাই মজাসে আড্ডা মেরে চলেছি। হঠাৎ নজরে এলো একটা বয়স্ক ভুঁড়িওলা লোক পুকুরে ডুব দিয়ে দিয়ে বেশ আয়েশ করে স্নান করছে। কি বদমাইশি বুদ্ধি চাপলো আমার মাথায় জানিনা, শিগগির কয়েকটা চকের টুকরো নিয়ে, যেই লোকটা ডুব মেরে উঠছিলো, অমনি তার মাথা তাক করে আমি সেই চকের টুকরোগুলো ছুঁড়তে লাগলাম। লোকটা যেই না ঘাড় ঘুরিয়ে উপরের দিকে তাকাচ্ছিলো, অমনি আমরা সবাই ঝট করে আড়ালে বসে পড়ছিলাম। মারতে মারতে বেশ কয়েকটা চকের টুকরো ঠিকঠাক লেগেও যাচ্ছিলো - আর সঙ্গে সঙ্গে জোর হাত তালি বন্ধুদের - তাতে আরও অনুপ্রেরিত হয়ে, আরও সঠিকভাবে নিশানা লাগাতে শুরু করলাম, with full concentration - হঠাৎ একটা চকের টুকরো ছুঁড়তে গিয়ে দেখি আমার হাতটা কে যেন পিছন থেকে শক্ত করে চেপে ধরেছে। এদিকে আমার শিকার পালিয়ে যাচ্ছে দেখে প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে আমি পিছন ফিরতেই দেখি সেলাইয়ের দিদিমণি (মিনতি দিদিমণি) আমার হাতটা ধরে আছেন, আর বড় দিদিমণি সহ বাকী সমস্ত দিদিমণিরা পিছনেই দাঁড়িয়ে আছেন। সঙ্গে থাকা আমাদের বন্ধুদের কোনও পাত্তা নেই - সবক'টা নিমেষেই হাওয়া হয়ে গেছে !! যাকে বলে একদম হাতে'নাতে caught like ক্ষুদিরাম। ওই হতচ্ছাড়া লোকটা কি করেছে, টুক করে একতলার টিচার্স রুমের জানালা দিয়ে complaint করে দিয়েছে। ব্যাস, আমার game over !! ঐদিন যে আরও একজন ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয়েছিলো সে কথা বলাই বাহুল্য !! 😏
পরে রাস্তায় সেই লোকটাকে দেখলেই আমি লুকিয়ে পড়তাম - কিন্তু। তারপরে বুঝেছিলাম যে ও আমাকে চিনতেই পারেনি, পারার কথাও অবশ্যি ছিলো না, কারণ মুখ তো ও ভালো করে দেখতেই পায় নি সেদিন !!
Comments
Post a Comment