না, ছিলো না
অতীন্দ্র দাঁড়িয়ারী |
আমার আটপৌরে দেড়শো বছর পেরিয়ে যাওয়া ইস্কুলে হোয়াইট বোর্ড ছিলো না - খড়খড়ে ব্ল্যাকবোর্ড আর মাধ্যমিক বোর্ড ছিলো। স্মার্ট ক্লাসরুম আর ইন্ডিভিজুয়াল ডেস্ক ছিলো না - ছিলো ঘরের মেঝেতে ময়লা জমে থাকা সপ্তম শ্রেণী - ক আর সারি সারি নড়বড়ে পায়ার 'বেঞ্চি' - যাতে পাঁচজন প্রাণের বন্ধু একসাথে বসতাম। স্পেশাল রেমেডিয়াল ক্লাস ছিলো না - কেশব নাগের অংকের বইয়ে তৈলাক্ত বাঁশে বাঁদরের ওঠানামা মাপতে মাপতেই গোঁফ এবং লেজ গজিয়ে গেছে আমাদের।
স্যুট টাই পরা টীচার্সদের কাছে পড়ার 'সৌভাগ্য' হয়নি আমাদের - 'ম্যানার্স' এবং 'ডেকোরাম' এর তালিমেও ঘাটতি থেকে গেছে বিস্তর - তবু বোকা কৈশোরের আমরা ধুতি শার্ট পরা ছাপোষা মাস্টারমশাইদের দেখলেই সিগারেট লুকোতাম - বিজয়ার পরে পায়ে হাত দিয়ে পেন্নাম ঠুকতাম। সেই বিরল এবং বিলুপ্ত প্রজাতির বাংলা মিডিয়াম ইস্কুলের মাস্টারমশাইরা - যারা সবাই হয়ত ভালো পড়াতেন না - কেউ একটু বেশীই মারকুটে ছিলেন - কারো নিরীহতার সুযোগে পঞ্চম পিরিয়ড হয়ে উঠত মাছের বাজার - যাদের কাছে আমাদের বোকা বাবা মায়েদের আবদার ছিলো "মাস্টারমশাই - কোনো রকম অসভ্যতা দেখলে দুই চড় কশিয়ে দেবেন"। তাই ভালো রেজাল্ট করে দেখা করতে গেলে ওঁরা শেক হ্যান্ড করে 'কংগ্র্যাটস' বলেন নি - আলতো করে কান মলে দিয়েছেন।
চকচকে রাংতার মোহে এই ইস্কুল গুলোকে আমরা মেরে ফেললাম - যাদের প্রতিটি শিক্ষককে আমাদের বাবা মা রা ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন - সকালের বাজারে একসাথে কাটাপোনা কিনতেন যে! স্কুলে থাকতে থাকতেই তাই আমরা সিনেমার ন্যুন শো চিনলেও - 'যৌন হেনস্থা' চিনিনি। ভাগ্যিস !! (~collected...)
Comments
Post a Comment