সেই সময়ের কথা


আদিতি কুণ্ডু (১৯৮৯)

১৯৮৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করে যখন আমি আর্টস-এ ভর্তি হলাম তখন আমার ভালো লাগতো না স্কুলে যেতে। কেননা ঐ বছরেই ৪ঠা মার্চ আমি বাবাকে হারিয়েছিলাম। ঐ'সময় পরীক্ষা না পিছিয়ে গেলে হয়তো আমার মাধ্যমিক পাশ করাই হয়ে উঠতো না। বাবা ঐ স্কুলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বলে হয়তো আনন্দবাবু ও সুনীল শাহ আমাকে একটু আলাদা চোখেই দেখতেন। সে যাই হোক, ক্লাসে বেশীরভাগ পুরানো বন্ধুদের দেখা পেলাম। সায়েন্সের পার্থ, আর সুকান্ত তো সেই ছোট্টবেলার বন্ধু। ধীরে ধীরে ওই সেকশনের সংযুক্তা, মহুয়ার সাথেও বন্ধুত্ব হলো। আমার প্রথম স্কুলে গান গাওয়া মনে হয় নবীনবরণ উৎসবে। তারপর সরস্বতী পূজোয় (১৯৮৮) - তবে সেই বছর কালাশৌচ থাকায় পূজোর কাজ আমি করতে পারিনি। তবে সন্ধ্যাবেলার অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলাম, সেটা এখনও মনে আছে। আর হ্যাঁ, তার আগে বন্ধুদের সাইকেলে চেপে স্কুলে স্কুলে নিমন্ত্রণ পত্র বিলি করতে গিয়েছিলাম - সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা। কিন্তু ফিরে এসে শিববাবুর কাছে বকা খেতে হয়েছিলো। কেন আমি ছেলেদের সাথে গিয়েছিলাম? বাবা ছিলেন না বলেই হয়তো সবাই আমাকে শাসন করতেন। আর একটা খুব ভালোলাগার জিনিষ ছিলো, সেটা হলো স্কুলের ক্রিকেট ম্যাচ। অতীন্দ্র, রাজু, সুকান্ত ওরা আমাকে বলতো খেলা দেখার জন্যে মাঠে আসতে। আমিও দাদার সাথে চলে আসতাম। ওরা জিতলে খুব ভালো লাগতো আমার। তবে স্কুলে টিফিন কোনোদিন একা খেতে পারিনি। সবকটা বাঁদর এসে মুখ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে থাকতো। পয়সা দিতেই হতো - না'দিলে মনে হয় আমার খাওয়া বন্ধ হয়ে যেতো (এই বাঁদরগুলো এটা কিন্তু মজা করলাম !)।  সেইসময় যে ওদেরকে একটু হলেও দিতে পেরেছি, সেটাতেই আমি ধন্য। যা দিয়েছি মুখ বুজে ওরা মেনে নিয়েছে। সব'টা লেখা সম্ভব নয়, বা অনেক কিছু এখন ভুলেও গেছি - শেষে একটা কথাই বলবো যে আমার সাথে রন্জ্ঞুর তখন অতো কথা হতো না, যেটা আজকাল খুব হয়। 😋

Comments

Popular posts from this blog

First Get Together - 22nd Dec 2017

Alma Mater, লাইব্রেরী ও কিছু ছেঁড়া কথা